মহানগর ডেস্ক: এখনও ভোট শুরু হয়নি। মনোনয়ন জমা দিতে এসেই দক্ষিণ কলকাতার আলিপুরে তৃণমূল-বাম সম্মুখ সমর। হাজরার মোড়ে বৃহস্পতিবার সিপিএম প্রার্থী সায়রা শাহ হালিম হুড খোলা জিপে এসে পৌঁছন, তাঁর পাশে ছিলেন যাদবপুরের সিপিএম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য। গোটা হাজরা এলাকা লালে লাল হয়ে গিয়েছিল এদিন। সৃজন এই মনেনয়ন জমা দেওয়ার মিছিল থেকে বলেন, “আমরা জিতব।” এরপর মিছিল এগোতে থাকে গোপাল নগরের দিকে মনোনয়ন জমা দেওয়ার লক্ষ্যে।
অন্যদিকে তৃণমূল প্রার্থী মালা রায়ও একই সময়ে মনোনয়ন জমা দিতে আসেন একই জায়গায়। সেই প্রেক্ষিতেই মুখোমুখি চলে আসে বাম ও তৃণমূলের মিছিল। তাতেই প্রবল উত্তেজনা ছড়ায়। হাজরা থেকে মিছিল করে বাম প্রার্থীরা আলিপুরের গোপালনগর এসেছিল। দক্ষিণ কলকাতার বাম প্রার্থী সার্ভে বিল্ডিংয়ে ঢুকলেই অশান্তি শুরু হয়। এলাকায় থাকা পুলিশবাহিনী পরিস্থিতি সামাল দিতে কার্যত হিমসিম খেয়ে যায়।
আধঘণ্টারও বেশি সময় ধরে হাজরা মোড় থেকে গোপালনগর এলাকার পরিস্থিতি অশান্ত ছিল। তবে পুলিশ অবশেষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির উপক্রম হয়ে যাওয়ায় মনে করা হচ্ছিল পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে। কিন্তু সিপিএম-তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের মধ্যে দুরত্ব বজায় রাখতে সক্ষম হয় পুলিশ। প্রশ্ন একটাই, পুলিশ সব জেনেও কেন দুই পক্ষকে এক সঙ্গে আলিপুর সার্ভে বিল্ডিংয়ে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় নির্ধারিত করল?
তবে তুমুল উত্তেজনার মধ্যেই বাম এবং তৃণমূল প্রার্থী দুজনেই মনোনয়ন দাখিল করেন। তবে তৃণমূলের দাবি, মানুষ তাঁদের প্রতি আস্থা রাখে না এটা বুঝতে পেরেই সিপিএম এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে। তাঁদের পরাজয় যে নিশ্চিত এটা তাঁরা মানতে পারছে না। অন্যদিকে, সিপিএম-এর অভিযোগ, পুলিশ দলদাস হয়ে গেছে। সব ব্যবস্থাই তৃণমূলের জন্য করা হয়েছে। এদিকে তাঁদের প্রার্থীকেই আটকে দেওয়া হয়। শারীরিক হেনস্তার অভিযোগও তোলা হয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
তৃণমূল যে কায়দায় গ্রামে, পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীদের প্রচার করতে, মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দিয়েছে, ঠিক সেই একই কায়দা লোকসভা নির্বাচনেও প্রয়োগ করছে বলে সিপিএমের অভিযোগ। সিপিএমের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলা হয়েছে, এতো বাহিনী এসেছে, তারা এই সময় কোথায়? কমিশনের বিরুদ্ধেও পুলিশের মতোই পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করা হয়েছে সিপিএমের তরফে।
এদিকে তৃণমূলের অভিযোগ, মনোনয়ন জমা দিতে এসে সিপিএম তৃণমূলের মিছিলের দিকে তাকিয়ে চোর স্লোগান দিয়েছে। সিপিএমের বক্তব্য যেটা সত্যি সেটাই বলা হয়েছে, তৃণমূল প্রমাণ করতে পারবে তারা চাকরি চুরি সহ অন্যান্য চুরি করেনি?