মহানগর ডেস্ক: তিন লাখ টাকার সোনার চেন পাঠানোর পর ব্যাঙ্ক থেকে এসএমএস এসেছিল আপনার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে গিয়েছে। মেসেজ পাওয়ার পরেই উল্টে অ্যাকাউন্ট থেকে হাপিস তিন লক্ষ টাকা। অভিনব প্রতারণার ঘটনাটি ঘটেছে দিল্লির এক সোনার দোকানের মালিকের ক্ষেত্রে।
পাঁচ দশক ধরে চাঁদনি চক এলাকার কুচা মহাজনিতে সোনা জহরতের শোরুম চালিয়ে আসছেন নওল কিশোর খান্ডেলওয়াল নামে এক সোনা -রুপো-জহরতের ব্যবসায়ী। গত সপ্তাহে নওল কিশোর গিয়েছিলেন অযোধ্যায়। তারপর এক ব্যক্তি ফোনে তাঁর দোকানে যোগাযোগ করে। ওই ব্যক্তি পনরো গ্রামের একটি সোনার চেনের অর্ডার দেয়। ওই ব্যক্তি তাঁকে জানায় সে তাঁর দোকানে আসতে পারছে না।
টাকা পাঠানোর জন্য খাণ্ডেলওয়ালের ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিংয়ে বিশদ বিবরণ চায় যাতে সে টাকাটা পাঠাতে পারে। এর কিছুক্ষণ পর তিনি ফোনে মেসেজ পান তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৯৩,৪০০ টাকা ঢুকেছে। সঙ্গে তার ছেলের স্ক্রিন শটও পাঠানো হয়। এর ওই ব্যক্তির পাঠানো ঠিকানায় সোনার চেনটি পাঠিয়ে দেন খাণ্ডেলওয়াল।
পরের দিন ওই ব্যক্তি তাঁকে ফোন করে জানায় তার তিরিশ গ্রামের সোনার চেন দরকার। একইভাবে তিনি ফোনে এসএমএস পান তাঁর অ্যাকাউন্টে ১,৯৫,৪০০ টাকা ঢুকে গিয়েছে। এরপরই তিরিশ গ্রামের সোনা চেন পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পাঠানোর পর দিল্লির ওই সোনা-রুপো ব্যবসায়ী তাঁর ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট মোবাইল অ্যাপে পরীক্ষা করেন। জানতে পারেন কোনও টাকাই তাঁর অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়নি।
এরপর তাঁকে পাঠানো এসএমএসগুলো পরীক্ষা করে জানতে পারেন কোনও এসএমএসই ব্যাঙ্ক থেকে পাঠানো হয়নি। তবে ব্যাঙ্কগুলি যে ফরমাট ব্যবহার করে, সেই ফরমাট ব্যবহার করে ধোঁকা দেওয়া হয়েছে। প্রতারিত সোনা-রুপোর ব্যবসায়ী জানান তিনি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যস্ত ছিলেন, তাই প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেননি। তিনি তাঁর ছেলেকে ব্যাঙ্কে খোঁজখবর নিতে পাঠিয়েছিলেন। ব্যাঙ্ক জানায় কোনও টাকাই জমা পড়েনি। ব্যাঙ্কের অফিসাররা জানিয়েছেন এ ব্যাপারে তাঁদের কোনও দায়িত্ব নেই।
খাণ্ডেলওয়ালার ছেলে মায়াঙ্ক জানায় তাঁর বাবার ফোনে ব্যাঙ্কের অ্যাপ থাকায় সে পরীক্ষা করে উঠতে পারেনি। ঘটনার পর পুলিশ অভিযোগ দায়ের করলেও প্রতারকদের কোনও হদিশ পায়নি। খাণ্ডেলওয়ালের মতো ওই মহল্লা ও দেশের নানা জায়গায় এ ধরণের প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
প্রতারণার ঘটনাটি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সাইবার ক্রাইম পোর্টালে নথিভুক্ত করা হলেও বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন এ ধরণের প্রতারণা সাইবার আইনের অধীনে পড়ে না। এটি প্রতারণার ঘটনা। কোনও প্রতারক ব্যাঙ্কের পোর্টাল বা কোনও ওয়েব পোর্টাল থেকে একটি মেসেজকে জালিয়াতি করে কাজ হাসিল করেছে। এটি ভারতীয় দণ্ডবিধির অধীনে মামলাযোগ্য।