মহানগর ডেস্ক: ভালো স্কুলে পড়ার সুযোগ, উচ্চ শিক্ষায় সাহায্য এবং ভবিষ্যতে মোটা আয়ের ব্যবস্থা (Making False Promise For Higher Education, Handsome Income)। এমন মিথ্যে প্রতিশ্রুতির ফাঁদে পা দিয়ে এদেশের বিভিন্ন জায়গায় শিশু পাচারকারীদের কাছে পাঁচশো টাকায় সন্তান বিক্রির (Child Selling By Parents) ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে।
বিশেষ করে বিহার থেকেই ওই কটি টাকার জন্য শিশুসন্তান বিক্রির ঘটনা ঘটেছে বলে চাঞ্চল্যকর খবর প্রকাশ্যে এসেছে। বিক্রির পর সেইসব শিশুর করুণ হাল হয়ে থাকে এবং তাদের জোর করে ১৮ ঘণ্টা কাজ করানো হয়। সারাদিনে জোটে একবারই খাবার। এমনকী যে টাকা দেওয়ার কথা বলে শিশুদের কিনে থাকে চক্রের লোকজন, তার একটি টাকাও দেওয়া হয় না। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন বচপন বাঁচাও আন্দোলনের কর্মীরা।
গত জুন মাসে তারা জুন মাসে রাজস্থান থেকে এমনই বিক্রি হওয়া শিশুদের উদ্ধারে সহায়তা করেছে। সংগঠনের এক কর্মী জানিয়েছেন বর্তমানে পাচারকারীরা তাদের শিশু পাচারের ধরণ পাল্টে ফেলেছে। তারা আগে যেমন শিশুদের ট্রেনে করে পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যেতো, এখন তার বদলে বাসে করে নিয়ে যায়। ফলে হদিশ করা যেমন মুশকিল, তেমনই তাদের উদ্ধার করাও কঠিন হয়ে পড়ছে। পাচারকারীদের উদ্দেশ্য যেন তেন প্রকারে টাকা রোজগার করা।
পাচার হওয়া শিশুদের পড়াশোনার ব্যাপারে সংগঠন জানায় বিভিন্ন জেলার শিশু কল্যাণ কমিশনের নির্দেশে শিশু কল্যাণ প্রতিষ্ঠানগুলিতে পাঠানো হয়েছে। বর্তমান শিশু কল্যাণ কমিটি উদ্ধার হওয়া শিশুদের পড়াশোনার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবে।
বচপন বাঁচাও আন্দোলনের আরেক কর্মী জানান রাজস্থান থেকে আট থেকে সতেরো বছরের ১৮৯টি শিশু,কিশোর শিশুকর্মী হিসেবে কাজ করছিল। তাদের উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৭২ জন জয়পুরের। অধিকাংশই চুরি তৈরির কারখানায় কাজ করানো হচ্ছিল। আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ওই কর্মী জানান গত পাঁচ বছরে ২.২৯৫জন শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। আশ্চর্যজনকভাবে তাদের মধ্যে ১,২৬৯ জন শিশুই জয়পুরের।
তবে বেশির ভাগ শিশু উদ্ধার হয়েছে বিহার থেকে। তাদের অধিকাংশ চুরি বানানোর কারখান, মোটর গ্যারেজ, ধাবা ও সেলাইয়ের কারখানায় কাজ করানো হতো। অধিকাংশ পাচারকারীর ঠিকানা বিহার। কোভিডের পর তারা তাদের মোডাস অপারেন্ডি পাল্টে ফেলে। এখন ট্রেনের বদলে বাসে করেই শিশুদের নিয়ে যাওয়া হয়।
পাচারকারীরা বাসের কোচ বুক করে তাদের পাচার করে থাকে। বচপন বাঁচাও আন্দোলনের পরিচালক মণীশ শর্মা জানান জুন মাস হল অ্যাকশন মান্থ। এই মাসেই তাদের কর্মীরা অবিশ্রান্তভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাচার হওয়া শিশুদের উদ্ধার অভিযান করে থাকে।
প্রতিদিনই পাচার হওয়া শিশু উদ্ধার করা হচ্ছে। তবে এখনও বহু শিশু শ্রমিক হিসেবে কাজ করে চলেছে। তবে পরিচালক স্বীকার করেছেন এই কাজে পুলিশ ও রাজ্য সরকারগুলি তাদের সাহায্য করে থাকে। এই শিশু পাচারের বিরুদ্ধে তাঁদের লড়াই চলবে বলে জানিয়েছেন তিনি।