মহানগর ডেস্ক: ক”দিনে এক বছর হয়? প্রশ্নটা করা বোকামি কারণ ছোট্ট শিশুও জানে কদিনে এক বছর হয়। কিন্তু যদি জানতে পারেন একজন বছরের তিনশো দিন ধরে ঘুমোন, (Man Sleeps Three Hundred Days A Year) তাহলে কী বলবেন একালের কুম্ভকর্ণ সম্পর্কে। রামায়নের রাবণের ভাই কুম্ভকর্ণ বছরে ছ মাস ঘুমোতেন। আর এযুগে একালের কুম্ভকর্ণ বছরে ঘুমোন তিনশো দিন। পুরাণের কুম্ভকর্ণকে হেসেখেলে টেক্কা দিয়েছেন রাজস্থানের ভাদোয়ার পুখারাম।
তবে ইচ্ছে করে ঘুমের রেকর্ড করেননি। অ্যাক্সিস হাইপারসোমনিয়া (Axis Hypersomnia)অসুখে আক্রান্ত তিনি। তাই বছরের তিনশো দিন ভোঁস ভোঁস করে ঘুমোন তিনি। তাঁর এমন ঘুমের বহর দেখে গ্রামের মানুষ যেমন ভিমরি খান, তেমনই পুখারামকে নিয়ে কৌতূহলেরও শেষ নেই। চিকিৎসা শাস্ত্র বলছে মস্তিষ্কের মধ্যে থাকা টিএনএফ-আলফা নামে প্রোটিনের কারণেই এই ঘুমের বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।
পুখারাম গত তেইশ বছর ধরেই বছরের প্রতিদিন এই রোগের শিকার হয়ে বেদম ঘুমিয়ে চলেছেন। আর ঘুম থেকে ওঠার পর হাঁটাচলাও সম্ভব সেভাবে হয়ে ওঠে না। তাঁর এমন অবস্থায় পরিবারের লোকজনেরাই তাঁকে খাওয়ানো, স্নান করানো থেকে যাবতীয় কাজ করে দেয়। এবং তাঁর গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হওয়া অবস্থাতেই ওসব করা হয়ে থাকে।
ঘুমের কারণে কোনও কাজ সেভাবে করে উঠতে পারেন না। একটা ছোট মুদীর দোকান রয়েছে তাঁর। সেই দোকানটি পাঁচদিন খোলা হয়। কারণ একটাই ভয় এই বুঝি ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। এই মহা-ঘুমের কারণেই তাঁর কাজকর্ম শিকেয় উঠেছে। কাজই বা করবেন কিভাবে। বছরের তিনশোদিন ঘুমোলে কারও পক্ষে কিছু করা সম্ভব? প্রথম দিকে দিনে পনেরো ঘণ্টা ঘুমোতন পুখারাম। তাঁর এমন ঘুম থেকে মাথায় বাজ পড়েছিল পরিবারের লোকজনদের। খুব চেষ্টা করেছিলেন ডাক্তার দেখিয়ে সুস্থ,স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর।
কিন্তু কোনও কাজে আসেনি। তারমধ্যে তাঁর ঘুমের বহরও বেড়ে যায়। ২০১৫ সালের মধ্যে সেই ঘুমের বহর বাড়তেই থাকে। তবে বছরের তিনশোদিন ঘুমোনোর কারণে মাথা ব্যথাও বেড়ে যায় মারাত্মক। তবে এতকিছুর পরেও তাঁর স্ত্রী ও মায়ের আশা পুখারামের অসুখ সেরে সুস্থ, স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এই আশায় তাঁকে নিয়ে রয়েছেন তাঁরা।