মহানগর ডেস্ক: বোর্ডের পরীক্ষায় ৮২.৬৬ শতাংশ পেয়ে জেলায় শীর্ষস্থান অধিকার করেছেন তিনি (Topper In District Works As Daily Labour) । কিন্তু ঘরে দাউদাউ করছে অভাব (Acute Financial Crisis)। পরিবারে অনেকগুলো হাঁ মুখ। তাই তাঁর কাছে পৃথিবীটা সত্যিই কালো ধোঁয়া মনে হয়।
প্রতিবেশি ওড়িশার (Odisha) মেধাবী শীর্ষস্থান অধিকারিণী ছাত্রী কর্মাকে একরকম বাধ্য হয়ে বেছে নিতে হয়েছে দিন মজুরের কাজ। খয়রাপুট ব্লকের মুদুলিপাড়ার পাডেইগুডায় থাকেন কর্মা। পরীক্ষায় নজরকাড়া সাফল্যের পরেও প্রচণ্ড অর্থের অভাবে অধরা রয়ে গিয়েছে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন। মালকানগিরির বোন্দা আদিবাসী থেকে উঠে আসা কর্মার পড়াশোনায় এমন সাফল্যে প্রশংসায় পঞ্চমুখ রাজ্যপাল, কালেক্টর থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিকরা।
তাঁর অসাধারণ সাফল্য শুধু প্রশংসায় সীমাবদ্ধ ছিল না, তাঁকে সম্বর্ধনা জানিয়েছিল জেলা প্রশাসনও। ওড়িশার এই মেধাবী ছাত্রীটির সাফল্য প্রতিশ্রুতিময় ভবিষ্যতের দরজা খুলে দিয়েছিল। পড়াশোনার জন্য তাঁকে আশ্বাসও দেয় স্থানীয় প্রশাসন। আশায় বুক বেঁধে নাম নথিভুক্ত করেছিলেন ভুবনেশ্বরের রমা দেবী উইমেন্স ইউনিভার্সিটিতে।
কিন্তু কিছুদিন পরে প্রচণ্ড অর্থের অভাবে মুখ থুবড়ে পড়ে তাঁর স্বপ্ন। কঠিন বাস্তবের মুখোমুখি হন তিনি। পড়ার খরচ জোগাড় করতে না পেরে শেষপর্যন্ত মালকানগুড়িতে দিন মজুরের কাজে যোগ দেন কর্মা। যদিও জেলা প্রশাসন জানিয়েছিল কর্মা বার্ষিক তেরো হাজার টাকা স্টাইপেন্ড পান। তার মধ্যে হস্টেল ও স্কুলের খরচও রয়েছে। কিন্তু সেই টাকা ভালোভাবে পড়াশোনার জন্য মোটেই যথেষ্ট নয়।
তাঁর পরিবার বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প থেকে আর্থিক সহায়তা পেলেও কর্মার পড়াশোনার খরচ তাতে কুলোয় না। সোশ্যাল মিডিয়ার ওড়িশার ওই মেধাবী ছাত্রীর কাহিনি জানাজানি হওয়ার পর জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা তাঁর বাড়িতে যান। কর্মা জানায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার খরচ আনুমানিক তিন হাজার টাকা। জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা তাঁকে আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দেন।
তবে আশ্বাস, ভরসার পরেও তাঁর লক্ষ্যপূরণ অধরাই রয়ে গিয়েছে অন্য সব মেধাবী পড়ুয়ার মতো। যারা নিছকই টাকার অভাবে পড়াশোনায় বেশি দূর এগোতে পারে না। বিশেষ করে কর্মার মতো প্রান্তিক মানুষদের মতো। আর তাই তিনি এখনও উচ্চশিক্ষার আশায় লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর অদম্য মানসিকতা অবশ্যই কুর্নিশ পাওয়ার যোগ্য।