মহানগর ডেস্ক: “ভূপতিনগরে পুলিশকে না জানিয়ে মধ্যরাতে এনআইএ কেন গিয়েছে? মধ্যরাতে গ্রামের মানুষ অচেনা কাউকে দেখলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। ওরা জানিয়ে গেছিল? পুলিশকে না জানিয়ে কেন যায়? মধ্যরাতে কেন যাবে? বিজেপিকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য এনআইএ এসব করছে। কি অধিকার আছে এনআইএ-র? শূন্যে গুলি ছুড়েছে। ভোটের সময় কেন অ্যারেস্ট করবে? হামলা গ্রামের মহিলারা করেনি, এনআইএ করেছে”, ভূপতিনগরে এনআইএ-র উপর হামলা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এই কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার হুঁশিশারি, “বিজেপি এজেন্সিকে কাজে লাগাচ্ছে। ভোটের সময় কেন গ্রেফতার করবে? এই নিয়ে দেশজুড়ে আন্দোলন হবে”, হুঁশিয়ারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে বাহিনী দেওয়ার আগেই এনআইএ পৌঁছে যায়।
২০২২ সালের ২ ডিসেম্বর কাঁথিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার ঠিক আগে ভূপতিনগরে প্রবল বিস্ফোরণ হয়। তাতে তৃণমূলের ৩ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। একজনের মৃত দেহ দেড় থেকে ২ কিলোমিটার দূরে ছিটকে পড়ে। এই ঘটনার তদন্তেই এনআইএ পৌঁছেছিল ভূপতিনগরে। সেখানে তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত হয় এনআইএ আধিকারিকরা, মাথা ফাঁটে এক এনআইএ আধিকারিকের। ভাঙা হয় এনআইএ আধিকারিকদের গাড়ির কাচ। তৃণমূলের ২ জনকে এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়।
গত ৫ জানুয়ারির সন্দেশখালিতে ইডির উপর শেখ শাহজাহান বাহিনীর হামলার পর ৬ এপ্রিল ফের ভূপতিনগরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তৃণমূলের ২ ব্যক্তিকে নিয়ে আসার জন্য গেলে এনআইএ আধিকারিকরা আক্রান্ত হয়। এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পর সিপিএম সাংসদ বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্লজ্জের মতো ভূমিকা পালন করছে। তিনি এমন করছেন যাতে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়। তিনি চাইছেন রাজ্যের পরিস্থিতি এমন করে তুলতে যাতে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়, তখন সেই ঘটনাকে সামনে রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেন্টিমেন্টের রাজনীতি করবেন।”
বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে কোনও আইনশৃঙ্খলা নেই। রাজ্যে ৩৫৫ ধারা জারি করে ভোট করা দরকার। পশ্চিমবঙ্গ আফগানিস্তান হয়ে উঠছে।” প্রদেশ কংগ্রেস মুখপাত্র সৌম্য আইচ দাবি করেন, “রাজ্যে ৩৫৫ ধারা জারি করে নির্বাচন করতে হবে। রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বলতে কিছুই নেই। তাই ইডি, এনআইএ এই রাজ্যে তৃণমূলের দুস্কৃতীদের হামলার মুখে পড়ছে।” রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর উস্কানিতে এই ঘটনা ঘটাবার সাহস পাচ্ছে তৃণমূলের দুস্কৃতীরা।” প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর উস্কানিতে এসব হচ্ছে। সন্দেশখালির ঘটনার পরও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একই রকম প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন।”