Home Bengal সন্দেশখালির সব তদন্ত সিবিআইকে করতে নির্দেশ আদালতের, রাজ্যের তদন্তে অনাস্থা!

সন্দেশখালির সব তদন্ত সিবিআইকে করতে নির্দেশ আদালতের, রাজ্যের তদন্তে অনাস্থা!

by Sibapriya Dasgupta
36 views

মহানগর ডেস্ক : লোকসভা ভোটের মুখে সন্দেশখালিকাণ্ডে কলকাতা হাই কোর্টে বড় ধাক্কা খেল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল।  সন্দেশখালির ঘটনায় সমস্ত মামলার তদন্তভার সিবিআই-র হাতে তুলে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। সিবিআইকে পোর্টাল বানাতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এবার থেকে সন্দেশখালির জমি দখল, শ্লীলতাহানি,ধর্ষণ, ইডির উপর হামলা সহ সব মামলার তদন্ত সিবিআইকে বুধবার থেকেই তদন্ত শুরু করতে বলে দিল কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। ডিভিশন বেঞ্চের নজরদারিতে এই তদনৃত চলবে, পুলিশের এই মামলার তদন্তে কোনও ভূমিকাই রইল না। তদন্তের স্বার্থে পুলিশ ও প্রশাসনের যে কোনও উচ্চ পদমর্যাদার আধিকারিককে তলব করতে পারবে সিবিআই। রাজ্য প্রশাসনকে এই তদন্তে সিবিআইকে সার্বিকভাবে সিবিআইকে করতে হবে। বলা যায় গোটা সন্দেশখালি সিবিআইর হাতে চলে গেল। রাজ্যের খরচে তদন্তের স্বার্থে সন্দেশখালিতে এলইডি লাইট, সিসিটিভি বসাতে হবে। আদালত মনে করেছে, সন্দেশখালিকাণ্ডের তদন্তে রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালত সন্দেশখালির সমস্ত মামলার তদন্তভার সিবিআইকে দিয়ে দিল।

সন্দেশখালি নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মোট পাঁচটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। একত্রে সেই মামলাগুলি শুনছে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। সেই মামলাতেই এদিন রায় ঘোষণা করা হল। সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল উচ্চ আদালত।

ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ন্যায়বিচারের স্বার্থে সন্দেশখালির ঘটনায় যে নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন, সে বিষয়ে আদালতের কোনও সন্দেহ নেই। মহিলাদের উপর অত্যাচার, সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে তফসিলি জনজাতির জমি কেড়ে নেওয়া-সহ বিভিন্ন অভিযোগ বিবেচনা করে তাই আদালত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সিবিআই সন্দেশখালির মানুষের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করবে। আদালতের নির্দেশ, মামলার সব পক্ষকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সিবিআইয়ের কাছে সব অভিযোগ জমা দিতে হবে। সিবিআইয়ের চালু করা ইমেল আইডির মাধ্যমে অভিযোগ জানাতে হবে। অভিযোগকারীদের গোপনীয়তা বজায় রাখতে এই ব্যবস্থা। সন্দেশখালি এলাকায় ওই ইমেল আইডির প্রচার করতে হবে উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসককে। স্থানীয় ভাষায় সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক কাগজেও ওই বিষয়ে মানুষকে অবহিত করতে হবে বলে জানিয়েছে হাই কোর্ট।

আগামী ২ মে হাই কোর্টে এই মামলার পরবর্তী শুনানি। আদালত জানিয়েছে, স্থানীয়দের জমি কেড়ে নেওয়ার অভিযোগের যথাযথ অনুসন্ধান এবং তদন্ত করে পরবর্তী শুনানির দিন সিবিআইকে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। প্রয়োজনে তদন্তের স্বার্থে যে কোনও ব্যক্তি, সংস্থা, সরকারি কর্তৃপক্ষ, পুলিশ কর্তৃপক্ষ, এনজিও-সহ এ বিষয়ে আগ্রহী যে কোনও ব্যক্তির কাছ থেকে তথ্য এবং মতামত নিতে পারবে সিবিআই।

আদালত জানিয়েছে, সন্দেশখালিতে জমি হস্তান্তর, চাষের জমিকে ভেড়িতে রূপান্তর করার অভিযোগ তদন্ত করে বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে হবে সিবিআইকে। তদন্ত প্রক্রিয়ার উপর আদালত নজরদারি চালাবে। সিবিআইয়ের রিপোর্ট দেখে পরবর্তী নির্দেশ দেওয়া হবে। এ প্রসঙ্গে আদালতের পর্যবেক্ষণ, সন্দেশখালি মামলায় হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে মাথায় রেখে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে তদন্তের আবেদন জানানো হয়েছিল। বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে আদালত মনে করছে, কোর্টের নজরদারিতেই তদন্ত করবে সিবিআই।

এদিন সন্দেশখালির স্পর্শকাতর এলাকায় সিসি ক্যামেরা বসাতে বলেছে আদালত। উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, স্থানীয় প্রশাসনকে একসঙ্গে মিলে স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করতে হবে। রাস্তায় বসাতে হবে এলইডি আলো। সিসিটিভি এবং এলইডি আলোর খরচ বহন করবে রাজ্য সরকার। আদালতের নির্দেশ, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে রাজ্যকে এই সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় অনুমোদন এবং খরচ দিতে হবে। এ ছাড়া আদালত জানিয়েছে, আইন অনুযায়ী নির্যাতিত, ক্ষতিগ্রস্ত এবং সাক্ষীদের নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিতে পারবে সিবিআই। অর্থাৎ পুরো সন্দেশখালি আদালতের নির্দেশে এবার চলে এল সিবিআই-র হাতে। এই প্রসঙ্গে সন্দেশখালির সিপিএম-এর প্রাক্তন বিধায়ক ও বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী নিরাপদ সর্দার কলকাতা হাই কোর্টের এই নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “প্রথম থেকে আমরা যে দাবি করছিলাম, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলাম, আদালতের নির্দেশ সেটাই আবারও স্পষ্ট করল।
অন্যদিকে সন্দেশখালিকাণ্ডে নির্যাতিতাদের পাশে দাঁড়ানো বিজেপির আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল বলেন, ” আমরা আদালতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ, প্রশ্ন তুলেছিলাম, আমাদের অভিযোগ মহামান্য কললাতা হাই কোর্টের নির্দেশে মান্যতা পেল।”

You may also like

Mahanagar bengali news

Copyright (C) Mahanagar24X7 2024 All Rights Reserved