মহানগর ডেস্ক: রামনবমীর “পূণ্য লগ্নে” ভগবার শ্রীরামচন্দ্র কি বিজেপি ও তৃণমূলকে ভোটের মুখে মিলিয়ে দিলেম? রামনবমীর রঙিন মিছিলে যে ভাবে বিজেপি ও তৃণমূল রাজ্য মাত করে দিল, তাতে এই কথা না বললে ভুল হবে। তাই এই মিছিল দেখে বলতেই হয় রামচন্দ্র রামনবমীতে বঙ্গে বিজেপি-তৃণমূলকে আরও কাছাকাছি নিয়ে এলো! এছাড়াও বলা যায় বঙ্গ রাজনীতির প্রধান দুই শক্তিশালী দল রাজনীতির আলোচ্য বাদ দিয়ে ধর্মকে নির্ভর করে রাজনীতি করার খেলাটা আরও প্রকট ভাবে প্রকাশ করল।
বুধবার, রামনবমী উপলক্ষ্যে ঘাটালে মিছিলে রীতিমতো রামভক্তের বেশে গৈরিক পরে ঘটালের তৃণমূল প্রার্থী দেব স্থানীয় রামমন্দিরে পুজো দিয়ে মিছিলে হাঁটলেন এবং জয় শ্রীরাম ধ্বনি তুললেন নিজের গলায়। দেবের সঙ্গীদের হাতে ছিল গৈরিক পতাকা। তৃণমূলের পতাকা ছিল না। তাই হঠাৎ দেখে দেবকে মনে হচ্ছিল সংঘ সদস্য!
যাদবপুরের তৃণমূল প্রার্থী সায়নী ঘোষ তাঁর কেন্দ্র যাদবপুর ছেড়ে হাওড়ায় গিয়ে পাগড়ি পরে রামভক্ত সেজে শামিল হন তৃণমূলের রামনবমীর মিছিলে। এই মিছিলে তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, মনোজ তেওয়ারিও ছিলেন । সবার মুখেই ছিল জয় শ্রীরাম ধ্বনিও, যা শুনে অতীতে মুখ্যমন্ত্রী মেজাজ হারিয়েছিলেন একাধিক অনুষ্ঠানে।
ইসলামপুরের তৃণমূলের বিদ্রোহী বিধায়ক আবদুল করিম চৌধুরী তাঁর কার্যলয়ের বাইরে জলপানের ব্যবস্থা করেছিলেন রামনবমী উপলক্ষে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের রামনবমীর মিছিল নিয়ে রায়গঞ্জের বিজেপি প্রার্থী কার্তিক পাল ইসলামপুরে আবদুল করিম চৈধুরীর কার্যালয়ের সামমে এলে, কার্তিক পালকে নিজের হাতে জলের গ্লাস তুলে দিলেন আবদুল করিম চৌধুরী। বললেন, “এটা সৌজন্য”, তবে কার্তিক পাল এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
বীরভূমের শিউড়িতে তৃণমূলের প্রার্থী শতাব্দী রায় রামনবমীর মিছিলে হাঁটেন, জয় শ্রীরাম স্লোগান দেন এবং বলেন “রাম কারও বাবার সম্পত্তি নয়।” অন্যদিকে শিউড়িতে বিজেপির রাজ্যনেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় রামনবমীর মিছিলে বলেন, “তৃণমূল যবনের দল। ওরা কেন রামনবমীর মিছিল করছে?” যবন অর্থ অহিন্দু, জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় তাঁর বক্তব্যে ঠিক করে দিলেন কে হিন্দু, কে অহিন্দু! এটাই এখন বঙ্গ রাজনীতির অঙ্গ।
শুভেন্দু অধিকারী সকালে নিউটাউনের ইকো পার্কে রামনবমী উদযাপন ও মিছিল করে সেখান থেকে রামনবমী উদযাপনে বাসন্তীকে চলে যান।
তবে আদালতের নির্দপশ অমান্য করে অস্ত্রনিয়ে বিজেপি, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মিছিল যেমন হল, অন্যদিকে তৃণমূল নিজেদের হিন্দু প্রমাণ করতে রামনবমীর মিছিল করল বাংলায়। তৃণমূল ও বিজেপি রামনামে একাকার হয়ে গেল ভোটের আগে। প্রশ্ন একটাই সবার নজর রামে না ভোটে? তবে শাসকদল, বিরোধী দল কেউই আদালতের নির্দেশ মানল না। অস্ত্র নিয়ে বিজেপি যেমন মিছিল করল, দিলীপ ঘোষ তাঁর লোকসভা কেন্দ্রে অস্ত্র পুজো করলেন, তেমনই বিজেপি,তৃণমূল উভয় দলই আদালতের নির্দেশকে অমান্য করে ২০০ জনের বেশি মানুষ নিয়েই মিছিল করল, বাজল ডিজে, সঙ্গে উদ্দাম নাচ!