মহানগর ডেস্ক: যখন অধিকাংশ মানুষই আমৃত্যু নিজের করে কোনও একজনকে পাওয়ার জন্য লড়াই চালিয়ে যান,তখন নাইজেরিয়ার (Nigeria) বিরানব্বই বছরের এক প্রবীণ মানুষের স্ত্রীর সংখ্যা কত শুনলে যে কারোরই চোখ কপালে উঠতে বাধ্য। প্রবীণ মানুষটির নাম মহম্মদ বেলো আবু বকর। নিবাস বিডা। নাইজেরিয়ারই একটি শহর সেটি। বিরানব্বই বছর বয়েসে তিনি একশোরও বেশি বিয়ে করেছেন (Nigerian Old Married More Than One Hundred Women)। এই বিয়েগুলো নাকি স্বর্গীয় একটা ব্যাপার। সন্তানের সংখ্যা শুনলে চমকে না যাওয়াটাই স্বাভাবিক। সংখ্যাটা ১৮৫জন।
অধিকাংশ ছেলেমেয়ের সঙ্গে তাঁর অবশ্য সম্পর্ক নেই। আর একশো সাতজন স্ত্রীর মধ্যে দশ জনের সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে। তাঁর বিয়ে বহু বছর ধরেই সংবাদমাধ্যমের চর্চার বিষয়। তবে প্রচারের আলোয় ভালো করে আসেন এবছরে। সংবাদে জানা যায় তিনি মারা গিয়েছেন। নাইজেরিয়ার সংবাদপত্রকে অবশ্য আবু বকর জানান তাঁর মৃত্যু নিয়ে যে খবর বেরিয়েছে, সেটা নিছকই গুজব। তিনি অনেক ভালোভাবেই বেঁচে আছেন। বলা বাহুল্য বহাল তবিয়তেই। দিন কাটছে খোশমেজাজে। রীতিমতো চনমনে রয়েছেন ।
তাঁর মৃত্যু নিয়ে যারা গুজব রটিয়েছে তারা সর্বশক্তিমান তাঁর জন্য যা করেছেন, সেজন্য তাঁর প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়েই তা রটিয়েছে। সেজন্যই এসব খবর নিয়ে মাতামাতি করছে। তিনি যা করছেন তা স্বর্গীয় একটা ব্যাপার। এটা একটা কাজ। শেষ না হওয়া পর্যন্ত এমন কাজ তিনি করে যাবেন। তবে নাইজেরিয়ার স্থানীয় প্রশাসন একশোরও বেশি বিয়ে নিয়ে ঘোরতর আপত্তি জানিয়েছিল কারণ এর আইনি মর্যাদা আদতে কী দাঁড়াবে, সে ব্যাপারে তারা কোনও দিশা পাচ্ছিল না।
আবু বকরের একশোরও বেশি বিয়েকে ইসলামি আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলেই তারা জানিয়েছিল। ঘটনা হল নাইজেরিয়ায় নাগরিক আইনে বহু বিবাহের কোনও স্বীকৃতি নেই। তবে শরিয়ত আইনে পরিচালিত বারোটি প্রদেশে বহু বিবাহকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়ে থাকে। মুসলিম আইনে চারজন স্ত্রীকে নিয়ে একজন পুরুষ থাকতে পারেন। এমনকী পুরুষের পক্ষে আর্থিক ও প্রেম ভালোবাসা দিয়ে সমানভাবে তাদের দেখভাল করার ওপর বিষয়টিকে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু সেই সীমা পেরিয়ে তিরানব্বইজন স্ত্রীর দেখভাল,ভরণপোষণ করা কীকরে সম্ভব তাঁর মতো প্রাক্তন শিক্ষক ও ধর্মপ্রচারকের পক্ষে, যেক্ষেত্রে তাঁর বর্তমানে কোনও রোজগার নেই। তবে নিজের এই অসম্ভব ব্যাপারটাকে নিজের মতো করে ধর্মের তুলনা টেনে একটা তত্ত্ব খাড়া করেছেন আবু বকর।
তিনি বলেন, কোরাণ এ নিয়ে কোনও নির্দিষ্ট সীমারেখা টেনে দেয়নি। পুরো ব্যাপারটা নিজের ক্ষমতার ওপর নির্ভর করছে। বিরানব্বই বছরের আবু বকর স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের নিয়ে একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকেন। ২০০৮ সালে নাইজেরিয়ার একটি আদালত তাঁকে আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর ছিয়াশিজন স্ত্রীর মধ্যে বিরাশিজনকে ডিভোর্স করার নির্দেশ দেয়। না করলে সেখান ছেড়ে চলে যেতে বলে। কিন্তু সেই নির্দেশের তোয়াক্কা না করে তিনি স্ত্রীদের ডিভোর্স দিতে রাজি হননি।
তবে তাঁর জীবন কেউ যদি অনুসরণ না করেন, সে কথা বলেছেন একশোরও বেশি স্ত্রীর স্বামী আবু বকর। আদালতে যখন লড়াই চলছিল তখন তিনি বিবিসিকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বলেছিলেন সর্বশক্তিমানের ইচ্ছেতেই তিনি এ কাজ করতে পেরেছেন। জানিয়েছিলেন দশজন স্ত্রীর সঙ্গে থাকতে গেলে যেকোনও মানুষ মারা যেতে পারেন, কিন্তু তিনি আল্লার আশীর্বাদে সে কাজ করতে সক্ষম হয়েছেন।